বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে সরকার হটানোর ‘যুগপৎ আন্দোলন’ করতে ঐক্যমত হয়েছে বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের শরী লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চলমান সংলাপের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার বিকালে এলডিপির সাথে বৈঠক করে বিএনপি। ২০ দলীয় জোটের শরিক এলডিপির একাংশের চেয়ারম্যান অলি আহমদের মহাখালীর ডিওএইচএসের বাস ভবনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

এক ঘন্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমান এই ফ্যাসিবাদী সরকারকে সরিয়ে জনগণের একটি সরকার প্রতিষ্ঠা এবং জনগণের একটি পার্লামেন্ট গঠন করার ব্যাপারে আন্দোলন করতে একমত হয়েছি। আমরা আশা করি সকল রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার পরে যুগপৎভাবে এই আন্দোলন গড়ে তুলতে সক্ষম হবো এবং সেই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকার যাকে এদেশের জনগণ কেউই দেখতে চায় না তার পতন ঘটিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবো।

বিকাল ৫টা থেকে সাড়ে ৬টা পর্যন্ত এই সংলাপ হয়। সংলাপে বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ২০ দলীয় জোটের সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খান ছিলেন। এলডিপির ৭ সদস্যে প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দলটির প্রেসিডেন্ট অলি আহমদ। প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন, মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য নুরুল আলম, নেয়ামুল বসির, আওরঙ্গজেব বেলাল, সাকলাইন খান ও সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ। বৈঠকের পর অলি আহমদ বলেন, বর্তমান যে সরকার আছে তারা দেশকে ধ্বংস করে দিচ্ছে, দেশের জনগণ এক অস্বস্তিকর পরিবেশে বাস করছে, কারো জীবনের জান-মালের কোনো নিরাপত্তা নেই, মৌলিক অধিকার নেই, ন্যায় বিচার নেই। একটা মগের মুল্লুকে আমরা বসবাস করছি। এরকম অবস্থা দেশের মানুষের জন্য কাম্য নয়। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছি, এই ধরনের লুটপাট-অর্থ পাচারের জন্য এদেশ স্বাধীন করি নাই।

তিনি বলেন, আমরা চাই, এই অবস্থার অবসান হোক। আমরা আজকে সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, এই সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে এবং এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা এই সরকারের পতন ঘটাতে সক্ষম হবো। এসময়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তাকে অনতিবিলম্বে উন্নত চিকিতসার জন্য বিদেশে প্রেরণের দাবিও জানান অলি আহমেদ। গত ২৪ মে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বিএনপি সংলাপ শুরু করে। প্রথম দফায় মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্য, জোনায়েদ সাকির গনসংহতি আন্দোলন, সাইফুল হকের বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাথে সংলাপ করে বিএনপি। এছাড়া ২০ দলীয় জোটের শরিক জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর), জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), বাংলাদেশ লেবার পার্টি, ন্যাপ-ভাসানী ও মুসলিম লীগের সাথেও সংলাপ শেষ করেছেন বিএনপি মহাসচিব।